কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় নৈতিকতা প্রয়োজন

0
67

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু এসব প্রযুক্তি প্রয়োগে নৈতিকতা বা মানদণ্ড ঠিক করা প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে প্রযুক্তি বিশ্বে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। সম্প্রতি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই), অটোমেশন ও এ–সংক্রান্ত প্রযুক্তি খাতে নৈতিকতা ও নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছে।

ওই পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী, যুক্তরাজ্যের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপকসহ আট সদস্য রয়েছেন।

গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আট সদস্যর ওই উপদেষ্টা পরিষদ গুগলের সবচেয়ে জটিল চ্যালেঞ্জের বিষয়গুলো বিবেচনা করবে।

সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিস আয়োজিত এমআইটি টেকনোলজি রিভিউস এমটেক ডিজিটাল সম্মেলনে ওই পরিষদ গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

গুগল তাদের উঠতি প্রযুক্তিগুলো ব্যবহারের যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, তা নিয়ে বাইরে যেমন সমালোচনা হচ্ছে, তেমনি গুগলের কর্মীরাও সমালোচনা করছেন।

গত বছরের জুন মাসে গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, এআই প্রযুক্তিযুক্ত ড্রোন নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির উন্নয়ন নিয়ে তারা পেন্টাগনের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না। নৈতিকতার সঙ্গে যায় না বলে ম্যাভেন নামের ওই প্রকল্পে গুগলের কর্মীরা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানান। অনেকেই পদত্যাগপত্র জমা দেন।

ওই সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে বেশ কিছু নীতিমালা প্রকাশ করে তা মানার অঙ্গীকার করে গুগল। এর মধ্যে ‘সামাজিকভাবে উপকারী’ ও ‘মানুষের দায়বদ্ধতার’ বিষয়গুলো যুক্ত থাকবে।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, অ্যাডভান্সড টেকনোলজি এক্সটারনাল অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল (এটিইএসি) নামের ওই পরিষদের সদস্যরা এপ্রিল মাসে প্রথমবার সভা করবেন। গুগলের বৈশ্বিক কার্যক্রমের প্রধান কেন্ট ওয়াকার বলেন, এ বছর ওই পরিষদ আরও তিনটি সভা করবে।

গুগলের ওই পরিষদে যুক্ত হচ্ছেন গণিতবিদ বুবাকার বাহ, উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম জোসেফ বার্নস, বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক জোয়ানা ব্রাইসন।

ফেসিয়াল রিকগনিশনের মতো প্রযুক্তি কীভাবে ব্যবহার করা যাবে, সে বিষয়গুলো পর্যালোচনা করবেন তাঁরা। গত বছরে গুগলের তৎকালীন ক্লাউড কম্পিউটিং বিভাগের প্রধান ডিয়ান গ্রিন বলেন, বিভিন্ন তথ্যের অভাবে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির অন্তর্নিহিত পক্ষপাত রয়েছে।

‘রোবটস শুড বি স্লেভস’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে গবেষক ব্রাইসন রোবটের সঙ্গে মানুষের মতো আচরণের চলের বিরুদ্ধে যুক্তি দিয়েছেন। ব্রাইসন লিখেছেন, ‘রোবটকে মানুষের মতো করে তোলা হলে আমরা শুধু সত্যিকার মানুষকেই অমানুষ করে তুলব না, এর পাশাপাশি দায়িত্ববোধ ও সম্পদ বরাদ্দের ক্ষেত্রে বাজে সিদ্ধান্ত নিয়ে উৎসাহিত করে বসব।’

ব্রাইসন ২০১৮ সালে বলেছিলেন, এআই সিস্টেম কীভাবে পরিচালিত হয়, তা সঠিকভাবে জানানোর ব্যর্থতার বিষয়টির ক্ষেত্রে জটিলতার অজুহাত দেওয়া উচিত নয়। যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত কোনো সিস্টেম কোনো ক্ষতি করে, তখন এই সিস্টেমের পেছনের মানুষগুলোকে যাতে ধরা যায়, সে বিষয়টি আমাদের জানা প্রয়োজন।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে