যে দল ইস্তানবুলে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করেছিল, তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল মার্কিন মুলুকেই! তুরস্কের কনসুলেটে খাশোগি-হত্যা প্রসঙ্গে এমনটাই দাবি করা হয়েছে মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর একটি প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদক ডেভিড ইগনেশিয়াস দাবি করেছেন, কনসুলেটের ভিতরে তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থার রাখা আড়ি পাতার যন্ত্রে ধরা পড়া প্রতিলিপির পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুবাদ করেছেন এক সৌদি নাগরিক। যা থেকে স্পষ্ট, খাশোগিকে অপহরণ করে জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনাই ছিল ঘাতকদের। ওই যন্ত্রে পাওয়া একটি বার্তায় আরও উঠে এসেছে, খাশোগিকে অবসন্ন করে ফেলতে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়েছিল। এর পরে তাঁর মাথার উপরে একটি ব্যাগ রেখে দেওয়া হয়। তখনই ‘নিঃশ্বাস নিতে পারছি না, আমার শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে। এমনটা কোরো না!’ বলে আর্তনাদ করেন খাশোগি এবং এর কিছুক্ষণ পরেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ডেভিডের মতে, খাশোগি মারা যেতে তাঁর দেহ লোপাটের চেষ্টায় নেমে পড়ে ঘাতকেরা। বৈদুতিক করাত দিয়ে কিছু কাটার মতো আওয়াজ ধরা পড়েছে ওই যন্ত্রে। সেটাই খাশোগির দেহ কাটার শব্দ ছিল বলে সন্দেহ তাঁর। ওই প্রতিবেদকের আরও দাবি, নাম না-প্রকাশের শর্তে বেশ কয়েক জন মার্কিন এবং সৌদি ‘সূত্র’ কথা বলেছেন তাঁর সঙ্গে। তাতেই বোঝা গিয়েছে যে, খাশোগি হত্যার কিছু দিন আগেই আমেরিকাতে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ‘সৌদি র্যাপিড ইন্টারভেনশন গ্রুপ’-এর বেশ কয়েক জন সদস্য। সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের নির্দেশে কাজ করে এই টিম। সলমনের সমালোচক খাশোগিকে খুনের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধেই।
ডেভিডের কথায়, ‘‘আরকানসাস-এর ‘টায়ার-১ গ্রুপ’ বিশেষ অভিযানের কয়েক দফা প্রশিক্ষণ দিতে পারে বলে কয়েকটি সরকারি দফতরকে আগেই সতর্ক করেছিল মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ।’’ সৌদির সঙ্গে মৈত্রী প্রক্রিয়ার সূত্রেই এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল। খাশোগি হত্যার আগে-আগেই এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তবে হত্যার ঘটনা নিয়ে তরজা শুরুর পরেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানান ডেভিড।